চলতড়িৎ
Current Electricity
তড়িতাধান (Electric Charge)
যখন দুটি বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণ হয় তখন বস্তু দুটির মধ্যে তড়িতের সঞ্চার হয় ।
তড়িৎ দুই ধরনের হয় - যথা ১) স্থির তড়িৎ (Statical Electricity) ২)চল তড়িৎ (Current Electricity) |
যে তড়িৎ উৎপত্তি স্থলে সীমাবদ্ধ থাকে তাকে স্থির তড়িৎ বলে । আর যে তড়িৎ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে তাকে চল তড়িৎ বলে ।
যে ভৌত ধর্মের জন্য কোনো বাস্তুকণাকে একটি তড়িৎ চুম্বকীয় ক্ষেত্রে রাখলে একটি বল অনুভব করে তাকেই তড়িতাধান বলে ।তড়িতাধান দুই প্রকার ১) ধনাত্মক ও ২) ঋনাত্বক ।
তড়িৎ আহতিকরণের ব্যাখ্য ইলেট্রনের আধিক্য ও ঘাটতির সাহায্যে করা যায় ।ঘর্ষণের সময় যে বস্তু ইলেক্ট্রন হারায় সেই বস্তু ধনাত্মক তড়িৎ লাভ করে ।যে বস্তুটি ইলেক্ট্রন গ্রহণ করে সেটি ঋণাত্মক তড়িৎ গ্রস্থ হয় ।
আধানের একক ও মাত্রা :
আধানের C G S একক হলো esu বা stat coulomb এবং S I একক হলো কুলম্ব ( C ) । 1 C = 3 x 10^9 esu |
কুলম্বের সূত্র (Coulomb's law)

দুটি বিন্দু আধানের মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধান দুটির পরিমানের গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যেবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক ।
ধরা যাক দুটি আধান q1 ও q2 মধ্য দূরত্ব r এবং উহাদের মধ্য কার্যকর F হলে
F α q1q2 এবং F α 1/r^2
∴ F = k q1q2/r^2. এখানে k একটি ধ্রুবক যার মান আধানের একক , দূরত্বের একক ও মাধ্যমের উপর নির্ভর করে । একে কুলম্ব ধ্রুবক বলে । CGS পদ্ধদিতে বায়ুর ক্ষেত্রে k = 1 হয় ।
তড়িৎবিভাব এবং বিভাবপার্থক্য (Electric Potential and Potential Difference)
তড়িৎবিভাব : কোনো পরিবাহী তড়িতাহিত হলে ওই পরিবাহী অন্য কোনো পারিবাহীকে তড়িৎ দিতে পারে কিংবা অন্য পরিবাহী থেকে তড়িৎ নিতে পারে ।পরিবাহীর এই রকম তাড়িত অবস্থাকে ওর তড়িৎবিভাব বলে ।
উচ্চবিভাব ও নিম্নবিভাব : যখন কোনো বস্তুতে প্রচুর পরিমানে ধনাত্মক আধান উপস্থিত থাকে তখন বস্তুটি উচ্চ বিভবে আছে বলা হয় ।অনুরূপভাবে বলা যায় যে যখন কোনো বস্তুর মধ্যে প্রচুর পরিমানে ঋণাত্মক আধান সঞ্চিত হয় তখন বলা হয় বস্তুটি নিম্নবিভাব লাভ করেছে ।
বিভবপার্থক্য :দুটি সমজাতীয় বা বিপরীতজাতীয় তড়িৎগ্রস্থ বস্তুর মধ্যে তড়িৎ বিভবের যে পার্থক্য হয় তাকে ওদের বিভাবপার্থক্য বলে ।

কার্যের ধারণা থেকে তড়িৎবিভাবের ধারণা :
অসীম দূরত্ব থেকে একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে পরিমান কার্য করতে হয় তাকে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভব বলে ।

অসীম দূরত্ব থেকে +Q পরিমান আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে W পরিমান কার্য করতে হয় তাহলে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভব হবে V = W/Q | তড়িৎবিভব = কৃতকার্য / আধান
তড়িৎবিভব স্কেলার রাশি যেহেতু কার্য এবং আধান উভয়েই স্কেলার রাশি ।
তড়িৎক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে একক ধনাত্মক আধানকে নিয়ে যেতে যে পরিমান কাৰ্য্য করতে হয় তাকে ওই বিন্দুদয়ের বিভবপার্থক্য বলে ।
তড়িৎ বিভবের একক : SI পদ্ধতিতে একক হল ভোল্ট ,CGS পদ্ধতিতে একক esu বা স্ট্যাটকোলম্ব ।
1 V = 1J/1C |
1 VOLT =1/300 esu বিভব ।
তড়িৎক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে 1 কুলম্ব আধান নিয়ে যেতে যদি 1 জুলে কার্য করতে হলে ওই দুই বিন্দুদের তড়িৎবিভাব এক ভোল্ট হবে ।
তরিক চালক বল (Electromotive force EMF)
যে কারণে বৈদ্যতিক বর্তনীর কোনো অংশে অন্য কোনো শক্তি বৈদ্যতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় তরিকছালক বল |
তরিক চালক এর একক : ভোল্ট
তরিক চালক বলের উৎস :ইহা হল এমন একটি ব্যাবস্থা যেখানে কোনো প্রকার শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় । ডায়নামো ,তাপযুগ্ম ,বিদ্যুৎকোষ ,আলোক তরিক কোষ ইত্যাদি হলো তরিক চালক বলের উৎস ।
কোনো কোষের তরিক চালক বল ১.৫ ভোল্ট বলতে বোঝায় যে কোশ টির ধনাত্মক মেরু থেকে ১ কুলম্ব আধান ঋণাত্মক মেরুতে নিয়ে যেতে ১.৫ জুল কার্য করতে হয় ।
তড়িৎ বিভবের মাত্রা : কার্যের মাত্রা /আধানের মাত্রা = [ML^2T^-2]/ [IT] = [ML^2T^-3I^-1]
তড়িৎ চালক বল ও বিভাব পার্থক্যের মধ্যে পার্থক্য
তড়িৎচালক বল :
১)মুক্ত বর্তনীতে কোনো তড়িৎ কোষের মেরু দ্বয়ের মধ্যে যে বিভব পার্থক্য থাকে তাকে তড়িৎ চালক বলে ।
২)রাসায়নিক শক্তি বা অন্য কোনো শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হলে তড়িৎ চালক তৈরি হয় ।
৩)তড়িৎ চালক বল বিভব প্রভেদের কারণ ।
৪)তড়িৎ চালক বলের মান বিভব প্রভেদের তুলনায় বেশি ।
৫)তড়িৎ চালক মাপা হয় পোটেনসিওমিটার যন্ত্রের সাহায্যে ।
বিভব পার্থক্য :
১)বদ্ধ বর্তনীতে তড়িৎ কোষের দুই মেরূর মধ্যে যে বিভব প্রভেদ তৈরি হয় তাকে বিভব পার্থক্য বলে ।
২) বর্তনীর যে অংশে তড়িৎ শক্তি অন্য শক্তিতে রপান্তরিত হয় সেই অংশে বিভব পার্থক্য দেখা যায় ।
৩)বিভব পার্থক্য তড়িৎ চালক বলের ফল ।
৪)বিভব পার্থক্যের মান তড়িৎচালক বলের তুলনায় কম হয় ।
৫)ভোল্টমিটারের সাহায্যে বিভব পাৰ্থক্য মাপা হয় ।
তড়িৎ প্রবাহমাত্র (Electric Current):
তড়িৎ চালক বলের প্রভাবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে মুক্ত ইলেক্ট্রনের নিৰ্দিষ্ট দিকে নিরবিচ্ছিন্ন প্রবাহকে তড়িৎ প্রবাহ বলে ।

তড়িৎপ্রবাহমাত্রা :কোনো পরিবাহীর একক প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমান ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয় তাকে প্রবাহমাত্রা বলে ।
যদি পরিবাহীর কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে t সেকেন্ডে Q পরিমান আধান প্রবাহিত হয় তবে প্রবাহমাত্র হবে I = Q/t অর্থাৎ প্রবাহমাত্রা = আধান /সময় ।
তড়িৎ প্রাবাহমাত্রার একক : SI পদ্ধদিতে একক এম্পিয়ার (A) 1 A = 1C/1s অর্থাৎ কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে এক কুলম্ব করে আধান প্রবাহিত হলে প্রবাহমাত্রা হয় এক ampere ।CGS পদ্ধতিতে একক emu (electromagnetic unit)| 1emu প্রবাহমাত্রা = 10 A ।
তড়িৎ প্রবাহ দুই ধরনের হয় ১) সমপ্রবাহ (Direct Current or DC) 2) পরিবর্তী প্রবাহ (Alternating Current or AC)
1) সমপ্রবাহ : যে তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ সর্বদা একই থাকে তাকে সমপ্রবাহ বলে ।তড়িৎ কোষ থেকে সমপ্রবাহ পাওয়া যায় ।
2) পরিবর্তী প্রবাহ : যে তড়িৎ প্রবাহে প্রবাহের অভিমুখ নিৰ্দিষ্ট সময় অন্তর বিপরীত হয় তাকে পরিবর্তী প্রবাহ বলে । AC ডাইনামোতে পরিবর্তী প্রবাহ পাওয়া যায় ।
যে ভৌত ধর্মের জন্য কোনো বাস্তুকণাকে একটি তড়িৎ চুম্বকীয় ক্ষেত্রে রাখলে একটি বল অনুভব করে তাকেই তড়িতাধান বলে ।তড়িতাধান দুই প্রকার ১) ধনাত্মক ও ২) ঋনাত্বক ।
তড়িৎ আহতিকরণের ব্যাখ্য ইলেট্রনের আধিক্য ও ঘাটতির সাহায্যে করা যায় ।ঘর্ষণের সময় যে বস্তু ইলেক্ট্রন হারায় সেই বস্তু ধনাত্মক তড়িৎ লাভ করে ।যে বস্তুটি ইলেক্ট্রন গ্রহণ করে সেটি ঋণাত্মক তড়িৎ গ্রস্থ হয় ।
আধানের একক ও মাত্রা :
আধানের C G S একক হলো esu বা stat coulomb এবং S I একক হলো কুলম্ব ( C ) । 1 C = 3 x 10^9 esu |
কুলম্বের সূত্র (Coulomb's law)
দুটি বিন্দু আধানের মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধান দুটির পরিমানের গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যেবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক ।
ধরা যাক দুটি আধান q1 ও q2 মধ্য দূরত্ব r এবং উহাদের মধ্য কার্যকর F হলে
F α q1q2 এবং F α 1/r^2
∴ F = k q1q2/r^2. এখানে k একটি ধ্রুবক যার মান আধানের একক , দূরত্বের একক ও মাধ্যমের উপর নির্ভর করে । একে কুলম্ব ধ্রুবক বলে । CGS পদ্ধদিতে বায়ুর ক্ষেত্রে k = 1 হয় ।
তড়িৎবিভাব এবং বিভাবপার্থক্য (Electric Potential and Potential Difference)
তড়িৎবিভাব : কোনো পরিবাহী তড়িতাহিত হলে ওই পরিবাহী অন্য কোনো পারিবাহীকে তড়িৎ দিতে পারে কিংবা অন্য পরিবাহী থেকে তড়িৎ নিতে পারে ।পরিবাহীর এই রকম তাড়িত অবস্থাকে ওর তড়িৎবিভাব বলে ।
উচ্চবিভাব ও নিম্নবিভাব : যখন কোনো বস্তুতে প্রচুর পরিমানে ধনাত্মক আধান উপস্থিত থাকে তখন বস্তুটি উচ্চ বিভবে আছে বলা হয় ।অনুরূপভাবে বলা যায় যে যখন কোনো বস্তুর মধ্যে প্রচুর পরিমানে ঋণাত্মক আধান সঞ্চিত হয় তখন বলা হয় বস্তুটি নিম্নবিভাব লাভ করেছে ।
বিভবপার্থক্য :দুটি সমজাতীয় বা বিপরীতজাতীয় তড়িৎগ্রস্থ বস্তুর মধ্যে তড়িৎ বিভবের যে পার্থক্য হয় তাকে ওদের বিভাবপার্থক্য বলে ।
কার্যের ধারণা থেকে তড়িৎবিভাবের ধারণা :
অসীম দূরত্ব থেকে একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে পরিমান কার্য করতে হয় তাকে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভব বলে ।
অসীম দূরত্ব থেকে +Q পরিমান আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে W পরিমান কার্য করতে হয় তাহলে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভব হবে V = W/Q | তড়িৎবিভব = কৃতকার্য / আধান
তড়িৎবিভব স্কেলার রাশি যেহেতু কার্য এবং আধান উভয়েই স্কেলার রাশি ।
তড়িৎক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে একক ধনাত্মক আধানকে নিয়ে যেতে যে পরিমান কাৰ্য্য করতে হয় তাকে ওই বিন্দুদয়ের বিভবপার্থক্য বলে ।
তড়িৎ বিভবের একক : SI পদ্ধতিতে একক হল ভোল্ট ,CGS পদ্ধতিতে একক esu বা স্ট্যাটকোলম্ব ।
1 V = 1J/1C |
1 VOLT =1/300 esu বিভব ।
তড়িৎক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে 1 কুলম্ব আধান নিয়ে যেতে যদি 1 জুলে কার্য করতে হলে ওই দুই বিন্দুদের তড়িৎবিভাব এক ভোল্ট হবে ।
তরিক চালক বল (Electromotive force EMF)
যে কারণে বৈদ্যতিক বর্তনীর কোনো অংশে অন্য কোনো শক্তি বৈদ্যতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় তরিকছালক বল |
তরিক চালক এর একক : ভোল্ট
তরিক চালক বলের উৎস :ইহা হল এমন একটি ব্যাবস্থা যেখানে কোনো প্রকার শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় । ডায়নামো ,তাপযুগ্ম ,বিদ্যুৎকোষ ,আলোক তরিক কোষ ইত্যাদি হলো তরিক চালক বলের উৎস ।
কোনো কোষের তরিক চালক বল ১.৫ ভোল্ট বলতে বোঝায় যে কোশ টির ধনাত্মক মেরু থেকে ১ কুলম্ব আধান ঋণাত্মক মেরুতে নিয়ে যেতে ১.৫ জুল কার্য করতে হয় ।
তড়িৎ বিভবের মাত্রা : কার্যের মাত্রা /আধানের মাত্রা = [ML^2T^-2]/ [IT] = [ML^2T^-3I^-1]
তড়িৎ চালক বল ও বিভাব পার্থক্যের মধ্যে পার্থক্য
তড়িৎচালক বল :
১)মুক্ত বর্তনীতে কোনো তড়িৎ কোষের মেরু দ্বয়ের মধ্যে যে বিভব পার্থক্য থাকে তাকে তড়িৎ চালক বলে ।
২)রাসায়নিক শক্তি বা অন্য কোনো শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হলে তড়িৎ চালক তৈরি হয় ।
৩)তড়িৎ চালক বল বিভব প্রভেদের কারণ ।
৪)তড়িৎ চালক বলের মান বিভব প্রভেদের তুলনায় বেশি ।
৫)তড়িৎ চালক মাপা হয় পোটেনসিওমিটার যন্ত্রের সাহায্যে ।
বিভব পার্থক্য :
১)বদ্ধ বর্তনীতে তড়িৎ কোষের দুই মেরূর মধ্যে যে বিভব প্রভেদ তৈরি হয় তাকে বিভব পার্থক্য বলে ।
২) বর্তনীর যে অংশে তড়িৎ শক্তি অন্য শক্তিতে রপান্তরিত হয় সেই অংশে বিভব পার্থক্য দেখা যায় ।
৩)বিভব পার্থক্য তড়িৎ চালক বলের ফল ।
৪)বিভব পার্থক্যের মান তড়িৎচালক বলের তুলনায় কম হয় ।
৫)ভোল্টমিটারের সাহায্যে বিভব পাৰ্থক্য মাপা হয় ।
তড়িৎ প্রবাহমাত্র (Electric Current):
তড়িৎ চালক বলের প্রভাবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে মুক্ত ইলেক্ট্রনের নিৰ্দিষ্ট দিকে নিরবিচ্ছিন্ন প্রবাহকে তড়িৎ প্রবাহ বলে ।
তড়িৎপ্রবাহমাত্রা :কোনো পরিবাহীর একক প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমান ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয় তাকে প্রবাহমাত্রা বলে ।
যদি পরিবাহীর কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে t সেকেন্ডে Q পরিমান আধান প্রবাহিত হয় তবে প্রবাহমাত্র হবে I = Q/t অর্থাৎ প্রবাহমাত্রা = আধান /সময় ।
তড়িৎ প্রাবাহমাত্রার একক : SI পদ্ধদিতে একক এম্পিয়ার (A) 1 A = 1C/1s অর্থাৎ কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে এক কুলম্ব করে আধান প্রবাহিত হলে প্রবাহমাত্রা হয় এক ampere ।CGS পদ্ধতিতে একক emu (electromagnetic unit)| 1emu প্রবাহমাত্রা = 10 A ।
তড়িৎ প্রবাহ দুই ধরনের হয় ১) সমপ্রবাহ (Direct Current or DC) 2) পরিবর্তী প্রবাহ (Alternating Current or AC)
1) সমপ্রবাহ : যে তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ সর্বদা একই থাকে তাকে সমপ্রবাহ বলে ।তড়িৎ কোষ থেকে সমপ্রবাহ পাওয়া যায় ।
2) পরিবর্তী প্রবাহ : যে তড়িৎ প্রবাহে প্রবাহের অভিমুখ নিৰ্দিষ্ট সময় অন্তর বিপরীত হয় তাকে পরিবর্তী প্রবাহ বলে । AC ডাইনামোতে পরিবর্তী প্রবাহ পাওয়া যায় ।
ওহম সূত্র (Ohm's Law): উস্নতা এবং অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে কোনো পরিবাহীর মধ্যদিয়ে প্রবাহমাত্রা ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতি হয় ।
মনেকরি একটি পরিবাহী AB এর A প্রান্তের বিভব VA এবং B প্রান্তের বিভব VB ,VA > VB প্রবাহ A প্রান্ত থেকে B প্রান্তের দিকে যাবে । দুই প্রান্তের বিভাবপ্রভেদ VA - VB = V প্রবাহমাত্র I হলে ওহম সু্ত্র অনুসারে V α I বা V =RI ;R একটি ধ্রুবক যার মান পরিবাহীর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ।
বৈদ্যতিক রোধ : V =RI থেকে পাই I = V/R ; এই সমীকরণ বোঝা যাচ্ছে যে R এর মান বেশি হলে প্রবাহমাত্রা কম হবে ,R এর মান কম হলে প্রবাহমাত্রা বেশি হবে । এই R কে বলা হয় পারিবাহীটির বৈদুতিক রোধ ।কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ ও প্রবাহমাত্রার অনুপাতকে ওই পরিবাহীর রোধ বলে । রোধের সংগা নিম্ন রূপেও দেওয়া যায় । যে ধর্মের জন্য কোনো পরিবাহী বিদ্যুৎ প্রবাহের বিরুদ্ধে বাধা দেয় তাকে পারিবাহীটির বৈদ্যুতিক রোধ বলে ।
রোধের একক : SI একক হল ওহম (Ohm) একে Ω (omega) চিহ্ন সূচিত করে হয় ।
1 Ohm = 1 Volt/1 Ampere কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদ ১ ভোল্ট এবং উহার মধ্য দিয়ে ১ ampere তড়িৎ প্রবাহমাত্রা হলে পারিবাহীটির রোধ হবে এক ওহম ।
রোধের অন্যানোকে পরিবাহিতা(Conductance)বলে (1/R) |পারিবাহিতার একক mho (মো )
ওহম সুত্রের লেখচিত্র :
যে সকল পরিবাহী ওহম সু্ত্র মান্য করে তাদের ওহমিও পরিবাহী বলে ।
যাদের ক্ষেত্রে লেখচিত্রটি সরলরেখা হয় না তাদের অঅহমিও পরিবাহী বলে । যেমন - অর্ধপরিবাহী (জার্মেনিয়াম )
তারের দৈর্ঘ্য ,প্রস্থচ্ছেদের উপর রোধ নির্ভর করে ।
1.দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভরশীলতা : উস্নতা ,উপাদান ও প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহী রোধ দৈর্ঘের সমানুপাতি হয় । R α L
2.প্রস্থচ্ছেদের উপর নির্ভশীলতা : উস্নতা ,উপাদান ও দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকলে রোধ পরিবাহী তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের উপর ব্যাস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয় । R ∝ 1/A |
আপেক্ষিক রোধ (Resistivity):
পরিবাহীর দৈর্ঘ্য L ,প্রস্তাচ্ছেদ A এবং রোধ R হলে ,
R ∝ L ( A স্থির )
এবং R ∝ 1/A ( L স্থির )
ஃ R ∝ L/A ( L,A উভয়েই পরিবর্তিত হয়)
⇒ R = ρ L/A ( ρ হলো সমানুপাতিক ধ্রুবক )
ρ কে বলা হয় আপেক্ষিক রোধ ।
একক দৈর্ঘ্য এবং একক প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধকে উপাদানটির আপেক্ষিক রোধ বলে ।আপেক্ষিক রোধ এর একক ওহম -মিটার (SI পদ্ধতি ) এবং ওহম -সেমি (CGS পদ্ধতি )।
পারিবাহিতাঙ্ক (Conductivity):আপেক্ষিক রোধের অন্যানোক কে পারিবাহিতাঙ্ক বলে ।
∴ পারিবাহিতাঙ্ক ,σ = 1/ρ |
পারিবাহিতঙ্কের একক mho -metre ^-1(মো মিটার ^-1)
উষ্নতার সঙ্গে পরিবাহী ,অৰ্ধপরিবাহীর এবং অতিপরিবাহীর আপেক্ষিক রোধের পরিবর্তন :
পরিবাহী (Conductor): উষ্নতা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রায় সমস্ত পরিবাহীর আপেক্ষিক রোধ বৃদ্ধি পায় ।
ρt = ρo[ 1 + α( t - to)]
ρo হলো to উস্নতায় পরিবাহীর আপেক্ষিক রোধ এবং α হলো রোধের উস্নতা গুণাঙ্ক । উষ্নতার সঙ্গে আপেক্ষিক রোধের পরিবর্তন উপরের লেখচিত্র অনুযায়ী হয় ।
অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) :
উষ্নতা বৃদ্ধিতে অর্ধপরিবাহীর(সিলিকন ,জার্মেনিয়াম ) রোধ অত্যন্ত দ্রুত হারে হ্রাস পায় । উপরের লেখচিত্র থেকে এই পরিবর্তন বোঝা যায় ।
সংকট তাপমাত্রা প্রায় 4.2 K |
তুল্য রোধ :
কোনো তড়িৎ বর্তনীতে দুটি বিন্দুৰ মধ্যে যুক্ত কতকগুলি রোধের পরিবর্তে যদি একটি রোধ ব্যবহার করা যায় যাতে বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা এবং বিভাব উভয়েই অপরিবর্তিত থাকে তাহলে ওই একটিমাত্র রোধকে বলা হয় রোধগুলির তুল্য রোধ ।
রোধের দুই রকমের সমবায় হয় - ১) শ্রেনি সমবায় ২) সমান্তরাল সমবায় ।
শ্রেনি সমবায় (Series Combination):
কোনো তড়িৎ বর্তনীতে কতকগুলি রোধ যদি এমন ভাবে যুক্ত থেকে যে একটি রোধের শেষ প্রান্তের সঙ্গে অন্য রোধের প্রথম প্রান্ত যুক্ত হয় যাতে প্রতিটি রোধের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহ যায় তবে সামবায়টিকে শ্রেনি সমবায় বলে । উপরের চিত্রে R1, R2,R3 রোধের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহ I যায় । তিনটি রোধের দ্বারা বিভব পতন যথাক্রমে V1,V2 ও V3 হলে ওহম সূত্র থেকে লেখা যায় V1 = R1 I,V2 = R2 I এবং V3 = R3 I |
উপরের সমীকরণগুলো যোগ করে পাই V1 + V2 +V3 = R1I +R2I +R3I = (R1+R2+R3) I = RI( যেখানে R = R1 +R2+R3 ) = V ( রোধ তিনটির উপর মোট তড়িৎ বিভব )
উপরের সমীকরণ থেকে পাই R = R1 +R2 +R3
সুতরাং শ্রেনি সমবায়ে তুল্য রোধ রোধগুলির সমষ্টির সঙ্গে সমান ।
সমান্তরাল সমবায় ( Parallel Combination) :
কোনো তড়িৎ বর্তনীতে কতকগুলি রোধ যদি এমনভাবে যুক্ত থাকে যে রোধগুলির এক প্রান্ত একটি বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলি অন্য আর বিন্দুতে যুক্ত থাকে যাতে সকল রোধের উভয় প্রান্তে একই বিভব পড়ে তবে রোধের এরূপ সমবায়কে সমান্তরাল সমবায় বলে ।উপরের চিত্র থেকে দেখা যায় R1 রোধের মধ্যে প্রবাহমাত্রা I1, R2 রোধের মধ্যে প্রবাহমাত্রা I2 এবং R3 রোধের মধ্যে প্রবাহমাত্রা I3 .ওহম সূত্র থেকে লেখা যায়
I1 = (VA - VB)/R1
I2 = (VA - VB)/R2 এবং
I2 = (VA -VB)/R3
সমবয়টির তুল্য রোধ R হলে এবং মোট প্রবাহ মাত্রা I হলে
I = I1 +I2+I3 = (VA- VB) ( 1/R1 +1/R2 +1/R3)
আবার I = (VA - VB)/R
উপরের দুই সমীকরণ থেকে লেখা যায়
1/R = 1/R1 +1/R2 +1/R3
সমান্তরাল সমবায়ে তুল্য রোধের অন্যোন্যক প্রতিটি রোধের অন্যোন্যকে সমষ্টির সমান ।
কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ (I nternal Resistance of a Cell):
তড়িৎ কোষের সক্রিয় পদার্থের কিছুটা রোধ থাকে যা তড়িৎ প্রবাহের বিরুদ্ধে বাধা তৈরি করে ।এই বাধাকে কোষটির অভ্যন্তরীণ রোধ বলে ।
ধরা যাক কোষটির তড়িৎচালক বল E , অভ্যন্তরীণ রোধ r এবং প্রবাহ মাত্রা I হলে
I = E/(R + r)
ஃ E = I(R +r) = IR + Ir
IR = কোষটির প্রান্তীয় বিভাব প্রভেদ = V = বহিঃ রোধ (R) এর মধ্য দিয়ে একক ধনাক্তক আধানকে ধানাক্তক মেরূ থেকে ঋণাত্মক মেরুতে নিয়ে যেতে কৃতকার্য । Ir = v
তড়িৎ কোষের অভ্যন্তরীণ ঋণাত্মক মেরু থেকে একক ধনাত্মক আধানকে ধনাত্মক মেরুতে নিয়ে যেতে কৃতকার্য ।
ஃ E = V + v
⇒ V = E - v = E - Ir
মুক্ত বর্তনীতে I = 0 (R = ∝ ) V= E
এখান থেকে তড়িৎচালক বলের সংগা পাওয়া যায় । মুক্ত বর্তনীতে তড়িৎ কোষের দুই মেরুর মধ্যে যে বিভব পার্থক্য থাকে তাকে কোষটির তড়িৎচালক বলে ।
তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফল ( Heating Effect of Current) :
তড়িৎ প্রবাহের ফলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ তড়িৎ প্রবাহমাত্রা , রোধ এবং বিদুৎ প্রবাহের সময়ের উপরে নির্ভর করে । এই সূত্রগুলি তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফল সংক্রান্ত জুলের সূত্র নামে পরিচিত ।
সূত্রগুলি হলো -
1) প্রথম সূত্র : পরিবাহী রোধ ( R) এবং তড়িৎ প্রবাহের সময় অপরিবর্তিত থাকলে পারিবাহীতে উৎপন্ন তাপ ( Q ) তড়িৎ প্রবাহের(I) বর্গের সমানুপাতিক হয় । অর্থাৎ Q ∝ I ^2 ( R,t ধ্রুবক )
2) তড়িৎ প্রবাহমাত্র (I ),প্রবাহের সময়(t) অপরিবর্তী থাকলে উৎপন্ন তাপ পরিবাহী রোধের সমানুপাতিক হয় । অর্থাৎ Q∝ R ( I, t ধ্রুবক )
৩) তড়িৎ প্রবাহমাত্র ও রোধ অপরিবর্তিত থাকলে উৎপন্ন তাপ প্রবাহ কালের সমানুপাতিক হয় ।
অর্থাৎ Q ∝ t ( I , R স্থির )
উপরের তিনটি সূত্র একাত্রিত করে পাই ,
Q∝ I^2 Rt ( I,R t সকলেই পরিবর্তন সীল ।)
SI এককে সূত্রটি হয় Q= I^2 Rt জুল ।
Q ক্যালোরিতে প্রকাশিত হলে সুত্রটি হয়
Q = 1/J I^2 Rt ( J = জুল তুলঙ্ক , = 4.2 জুল / ক্যালরি )
⇒ Q = 0.24 I^2 Rt ক্যালোরি ।
তড়িৎ ক্ষমতা (Electrical Power) :

বৈদ্যুতিক কার্য করার হারকে তাড়িত ক্ষমতা বলে ।
তড়িৎ ক্ষমতা p = বৈদ্যুতিক কৃত কার্য্য (W)/ সময় (t) = VQ/t = VIt/t = VI.
ஃ P = VI ( V = তড়িৎবিভাব , I = তড়িৎ প্রবাহমাত্রা )
⇒ P = V V/R ( ওহম সূত্র থেকে I = V/R)
P = V^2/R = (IR)^2/R = I^2R
ஃ তড়িৎ ক্ষমতা P = VI =V^2/R = I^2R
তড়িৎ ক্ষমতার ব্যাবহারিক একক এবং S I একক ওয়াট (Watt বা W)
কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের বিভব প্ৰভেদ V ভোল্ট এবং তড়িৎ প্রবাহে মাত্রা I আম্পিয়ার হলে
তড়িৎ ক্ষমতা (P ) = V x I ওয়াট
ওয়াট = ভোল্ট X এম্পিয়ার ।
ওয়াট ঘন্টা (হয় তড়িৎ ) : এক ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র এক ঘন্টা ধরে চললে যে পরিমান তড়িৎ শক্তি খরচ হয় তাকে এক ওয়াট ঘন্টা বলে ।
1 ওয়াট ঘন্টা = 1 ওয়াট X 1 ঘন্টা । = 1 ওয়াট X 3600 সেকেন্ড = 3600 জুল ।
1 কিলো ওয়াট ঘন্টা (BOT একক ) = 1000 Wh
⇒ 1 BOT বা 1 কিলো ওয়াট ঘন্টা = (ওয়াট X ঘন্টা) / 1000 = (ভোল্ট X এম্পিয়ার X ঘন্টা) / 1000
তড়িৎ চুম্বকত্ত্ব ( Electromagnetism):
বিজ্ঞানী ওরেস্টেড প্রথম পরীক্ষা করে দেখান যে বিদ্যুৎবাহী তারের চতুর্দিকে একটি চুম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি হয় । এটিকে বলা হয় তড়িৎ প্রবাহের চুম্বকীয় ফল । কোনো শলাকা চুম্বককে তড়িৎ বাহী তারের নিকটে নিয়ে গেলে শলাকাটির বিক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় । তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ উল্টে দিলে চুম্বক শলাকার বিক্ষেপের অভিমুখও উল্টে যায় ।
চুম্বকের উপর তড়িৎ প্রবাহের ক্রিয়া (Effect of Electric Current on Magnet):
তড়িৎ বাহী তারের নিকটে কোনো ঘূর্ণনক্ষম চুম্বক রাখলে তার বিক্ষেপের অভিমুখ আম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম ও দক্ষিণ হস্ত মুষ্টি নিয়মের দ্বারা নিধার্রিত হয় ।
এম্পিয়ার এর সন্তরণ নিয়ম :
মনেকরি কোনোব্যাক্তি তড়িৎবাহী তারের ওপর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখে হাত ছড়িয়ে এমন ভাবে সাঁতার কাটে যে তার মুখ সর্বদা চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর দিকে থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির বাম হাতের দিকে শলাকা চুম্বকের উত্তর মেরুর বিক্ষেপ হবে ।
দক্ষিণ হস্ত মুষ্টি নিয়ম ( Right Hand Grip Rule):
একটি তড়িৎ বাহী তারকে ডানহাত দিয়ে এমন ভাবে মুষ্টিবদ্ধ করা হয় যাতে বুড়ো আঙুলটি তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ নির্দেশ করে তাহলে অন্য আঙুলগুলির অগ্রভাগ চুম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ নির্দেশ করবে । ইহাই তারের তড়িৎ পরিবাহীর উপর চুম্বকের ক্রিয়া ( Effect of magnet on current carrying conductor)
এখেত্রে কোনো চুম্বক ক্ষেত্রে কোনো বিদ্যুৎবাহী তার অবস্থান করলে ওই বিদ্যুৎবাহী তারের উপর বল প্রয়োগ করে । একে বিদ্যুৎ প্রবাহের উপর চুম্বকের ক্রিয়া বলে ।
ফ্লেমিংয়ের বামহস্ত নিয়ম (Fleming's left hand rule):তড়িৎ প্রবাহের দিক ও চুম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ জানা থাকলে তড়িৎ বাহী তারের বিক্ষেপ কোন দিকে হবে তা ফ্লেমিংয়ের বামহস্থ নিয়ম থেকে জানা যায় । নিয়মটি হল - বামহস্থের বৃদ্ধাঙ্গুলি ,মধ্যমা ও তর্জণী পরস্পর সমকোণে বিস্তার করলে যদি তর্জণী চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ এবং মধ্যমা তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ নির্দেশ করে তবে বৃদ্ধাঙ্গুলি তড়িৎবাহী তারের গতির অভিমুখ নির্দেশ করবে ।
বার্লো চক্র (Barlow's wheel) :
বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন ফ্লেমিংয়ের বামহস্ত নিয়ম অনুযায়ী হয়।

নীতি : এক্ষেত্রে তড়িৎবাহী চক্রটির উপর চুম্বকক্ষেত্রটি বল প্রয়োগ করে । ফলে চক্রটি অবিরাম ঘুরতে থাকে ।এই যন্ত্রে তড়িৎ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে(গতিশক্তি ) পরিণত হয় ।
কার্য্যপ্রণালী :
তড়িৎপ্রবাহ উপর থেকে নিচে হলে চক্রটি ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরে । তড়িৎ প্রবাহ উল্টে দিলে ঘূর্ণনও উল্টোদিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার দিকে হয় । তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করলে বা চুম্বকটি সরিয়ে নিলে ঘূর্ণন থেমে যাবে ।
বার্লের চক্রের ঘূর্ণন নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে - ১. তড়িৎপ্রবাহ মাত্রা বাড়ালে ঘূর্ণনের গতিবেগ বাড়ে ।২. চুম্বকক্ষেত্রের অভিমুখ অপরিবর্তিত রেখে তড়িৎ প্রবাহ উল্টে দিলে ঘূর্ণন বিপরীত দিকে হবে । ৩. তড়িত্প্রবাহের অভিমুখ একই রেখে চুম্বকটির মেরু দুটির অবস্থান উল্টে দিলে ঘূর্ণন এর দিক উল্টে যাবে ।
৪. চুম্বক ক্ষেত্র ও তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ একই সঙ্গে উল্টে দিলে ঘূর্ণনের অভিমুখ অপরিবর্তিত থাকবে ।
তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ (Electromagnetic Induction):
1831 খ্রিস্টাব্দে মাইকেল ফ্যারাডে প্রথম লক্ষ্য করেন যে চুম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে কোনো বদ্ধ পারিবাহীকে গতিশীল করলে পারিবাহীটির মধ্যদিয়ে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয় । এই ঘটনাকে বলা হয় তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ । এই তড়িৎপ্রবাহকে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহ বলে ।

তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ সম্পর্কীয় ফ্যারাডের সূত্রাবলি :
প্রথম সূত্র :
কোনো পরিবাহী তারের কুণ্ডলীর মধ্যে জড়িত চুম্বক বলরেখার(magnetic flux) পরিবর্তন ঘটলে কুণ্ডলীতে একটি তড়িৎ চালকবল আবিষ্ট হয় । যতক্ষন চুম্বক বলরেখার পরিবর্তন হয় ততক্ষণই আবিষ্ট তড়িৎচালক বল স্থায়ী হয় ।
দ্বিতীয় সূত্র : আবিষ্ট তড়িৎ চালক বলের মান কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত চুম্বক বল রেখার পরিবর্তনের হারের
সঙ্গে সমানুপাতিক হয় ।
তৃতীয় সূত্র বা লেন্জের সূত্র :
আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ এমন হয় যে , যে কারণের জন্য আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয় সেই কারণকে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহ সর্বদা বাধা দেয় ।
লেন্জের সূত্রটি শক্তির সংরক্ষণ সূত্রের একটি ভিন্ন রূপ অর্থাৎ শক্তির সংরক্ষন সূত্র থেকে লেন্জের সূত্রটি পাওয়া যায় ।
বৈদ্যুতিক DC মোটরেরকাৰ্য্য প্রণালী (Working Principle of DC Motor):
DC মোটরে বৈদ্যুতিক শক্তি যান্ত্রিকশক্তি তথা গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয় । এর ঘূর্ণন ফ্লেমিংয়ের বামহস্ত নিয়মের দ্বারা হয় ।
নীতি :
তড়িৎ পরিবাহীর উপর চুম্বক ক্ষেত্রের ক্রিয়ায় যে গতির সৃষ্টি হয় তার উপর নির্ভর করে বৈদ্যুতিক মোটর নির্মাণ করা হয় ।ঘূর্ণনে সক্ষম একটি পরিবাহী তারের কুন্ডলীকে একটি শক্তিশালী চুম্বক ক্ষেত্রে রেখে ওর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ পাঠালে কুণ্ডলীটি ঘুরতে থাকে ।

যে যন্ত্রের সাহায্যে তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশকে কাজে লাগিয়ে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে জেনারেটর বা ডায়নামো বলে ।
মূলনীতি (Principle):
জেনেরেটরে একটি পরিবাহী তারের কুন্ডলীকে একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে আবর্তন করানো হয় ফলে কুণ্ডলীর মধ্যে চুম্বক বলরেখার পরিবর্তন হয় ।এই জন্য কুণ্ডলীর প্রান্ত দুটির মধ্যে একটি তড়িৎ চালক বলের সৃষ্টি হয় ।
আবিষ্ট তড়িৎ চালক বলের পোলারিটি র পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের কারণ হল চুম্বকের মেরু দুটির সাপেক্ষে কুণ্ডলীর পর্যায়ক্রমিক অবস্থানের পরিবর্তন ।উৎপন্ন তড়িৎ চালক বল এমন হয় যে এর অর্ধ চক্রে একটি স্লিপরিং ধনাত্মক এবং অন্যটি ঋনাত্বক হয় । পরবর্তী অর্ধচক্রে দুই রিংটি ঋনাত্মক ও ঋণাত্মক রিংটি ধনাত্মক হয় । ফলে বহিঃবর্তনিতে তড়িৎ প্রবাহ বিপরীত দিকে হয় ।
বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ ):[ নীচের লিংক টি কপি করে googleএর address barএ paste করলে লিংক টি open হবে ।
https://forms.gle/nBMGHyQgWLYvgRss8
1) নীচের কোনটির আপেক্ষিক রোধ উস্নতা বৃদ্ধির সঙ্গে হ্রাস পায় ?
A ) পরিবাহী B) অর্ধ পরিবাহী C) অতি পরিবাহী D ) অন্তরক
2) R রোধের মধ্য দিয়ে t সময় ধরে i প্রবাহ চললে যে পরিমান তড়িৎ শক্তি খরচ হবে তা হল
A) iR²t B) i²Rt C) iRt D) i²R²t
3) বাড়ির বৈদ্যুতিক বর্তনীতে মেইন ফিউজ টি যুক্ত করা হয় -
A) লাইভ লাইনে B) নিউট্রাল লাইনে C) আর্থ লাইনে D) লাইভ ও নিউট্রাল উভয় লাইনে
4) অপরিবর্তিত উস্নতায় l িবাহীর দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদ V এবং পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ মাত্রা I হলে নীচের তারে সত্য ? A) V∝ I B) V ∝ I² C) V∝ I⁻¹ D) V ∝ I⁻²
5. গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনীতে যন্ত্রপাতি গুলি কোন সমবায়ে যুক্ত থাকে ?
A) শ্রেণী সমবায়ে B) সমান্তরাল সমবায়ে C) শ্রেণী এবং সমান্তরাল সমবায়ে D) শ্রেণী সমবায়ে অথবা সমান্তরাল সমবায়ে
6. পরিবাহী রোধ R দৈর্ঘ্য l এবং প্রস্থ চ্ছেদ A হলে A) R∝ l/A B) R ∝ lA C) R ∝ A/l D) R ∝ 1/lA
7. আর্থ তার ব্যবহার করা হয় -
A. বর্তনী সংযোগ সম্পূর্ণ করার জন্য B.নিরাপত্তার জন্য C. প্রবাহ মাত্রা কমানোর জন্য D. ভোল্টেজ বাড়ানোর জন্য
8. সুইচ যুক্ত করাহয় -
A. লাইভ তারে B.নিউট্রাল তারে C.আর্থ তারে D. আর্থ অথবা নিউট্রাল তারে
9. তড়িৎ চালক বল ( V) ,কার্য্য (W) ও আধান (Q) এর মধ্যে সম্পর্কটি হল -
A. Q= WV B. Q = V/W C. Q = V/W² D. Q= W/V
10. আবিষ্ট প্রবাহমাত্রার অভিমুখ জানা যায় কোন সূত্রের সাহায্যে ?
A. . দক্ষিণ হস্থ বৃদ্ধাগুষ্ঠি নিয়ম B. ফ্লেমিংমিং এর বাম হস্ত নিয়ম C.ঘড়ি সূত্র D. ফ্লেমিংয়ের ডান হস্ত নিয়ম
11. নিম্নলিথিত ভৌতরাশিিগগুলির মধ্যে অ্যামপিয়ার কোনটি?
A) .কুলম্ব সেকেণ্ড B).ভোল্ট ওহম⁻¹ C) ভোল্ট ওহম D) ভোল্ট ⁻¹ ওহম
12. নিম্ন লিখিত কোনটি তড়িৎ আধানের একক ?
A ) ভোল্ট B ) কুলম্ব C ) ওহম D ) ওয়াট
13. নীচের একক গুলির মধ্যে কোনটি রোধের SI একক ?
A) ভোল্ট B) আম্পিয়ার C) কুলম্ব D) ওহম
14.240 V-60 W বাতির রোধ
A) 480 ohm B) 960 ohm C) 240 ohm D) 720 ohm
15. বিভব প্রভেদ 10 V ও প্রবাহ মাত্রা 5A হলে রোধ হবে
A) 5 ওহম B) 4 ওহম C) 3ওহম D) 2 ওহম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন