প্রাণী বা উদ্ভিদ তার জীবন চক্রের যেকোনো সময়ে যে সব সজীব বা জড় উপাদান গুলির দ্বারা প্রবাভিত হয় ,তাদের সমষ্টিকে পরিবেশ বলে । পরিবেশের সজীব উপাদান হল মানুষ ,গাছপালা ,পশুপাখি ,কীটপতঙ্গ ইত্যাদি । আর নির্জীব উপাদান হল বায়ু ,মাটি ও জল ইত্যাদি । জল মাটি ও বায়ু ক্রমশ দূষিত হচ্ছে । ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে । এই ভারসাম্য রক্ষা করার এক মাত্র উপায় হল পরিবেশকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা ।
বায়ুমণ্ডল :
ভূপৃষ্ট থেকে প্রায় 1600 km উচ্চতা পর্যন্ত যে অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলে ।

বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান গুলি - নাইট্রোজেন ,অক্সিজেন ,কার্বন -ডাই -অক্সাইড , নিষ্ক্রিয় গ্যাস , হাইড্রোজেন ও জলীয় বাস্প ,ধূলিকণা ইত্যাদি ।বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর উষ্নতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সূর্য্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতি বেগুনী রশ্মির বিকিরণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে ।
উষ্নতা ও উচ্চতার ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয় । 1) ক্ষুব্ধ মণ্ডল বা ট্রপোওফিয়ার 2) শান্ত মন্ডল বা স্ট্রাটো স্ফ্রেয়ার 3) মেসো স্পিয়ার 4) থার্মোস্পিয়ার 5) এক্সওস্পিয়ার
উচ্চতা বৃদ্ধিতে তাপমাত্রার পরিবর্তন বিভিন্ন হলেও চাপ প্রতিটি স্তরের ক্ষেত্রে ক্রমশ কমতে থাকে ।
1) ক্ষুব্ধ মণ্ডল বা ট্রপোওফিয়ার :
ভূ পৃষ্ট থেকে 10 - 12 km উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত ।সমগ্র বায়ুমণ্ডলের প্রায় 75 % বায়ু এই স্তরে থাকে । এই স্তরের বায়ুতে ধূলিকণা ,জলীয় বাস্প ,মেঘ ইত্যাদি থাকে ; ঝড় বৃষ্টি প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা গুলি ঘটে । তাই একে ক্ষুব্ধ মণ্ডল বলে । উচ্চতা বৃদ্ধিতে এই স্তরের উষ্নতা ও চাপ উভয়েই কমে ।প্রতি km উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্নতা প্রায় 6.5 ⁰ C কমে । এই স্তরের উপরের দিকে উষ্নতা প্রায় - 56⁰ C হয় ।
বায়ু মণ্ডলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নের ছকে দেওয়া হল :
অঞ্চল | ভূপৃষ্ট থেকে উচ্চতা | উষ্নতার পরিসর(⁰C) | গ্যাসীয় উপাদান |
ট্রপোওফিয়ার | 0 - 12 km | +15 থেকে -60 (উচ্চতা বৃদ্ধিতে তাপমাত্রা কমে ) | N₂,O₂,CO₂,H₂O |
স্ট্রাটো স্ফ্রেয়ার | 12 - 45 km | -60 থেকে 0 (উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাড়ে ) | N₂,O₂,O₃ |
মেসো স্পিয়ার | 45- 85 km | 0 থেকে -100 (উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্নতা কমে ) | N₂,O₂,O₂⁺,NO⁺ |
থার্মোস্পিয়ার | 85 - 500 km | -100 থেকে + 1200 (উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্নতা বাড়ে ) | O₂⁺, O⁺,NO⁺ |
এক্সওস্পিয়ার | 500 - 1000 km | > 1200 | H₂,He |
স্ট্রাটো স্পিয়ার এর মধ্যে ভূ পৃষ্টের 16 km ওপর থেকে শুরু করে 30 km উচ্চতা পর্যন্ত ওজোন(O₃ ) গ্যাসের একটি স্তর দেখা যায় ওজোন স্তর বলে ।এই ওজোন স্তর সূর্য্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতি বেগুনী রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয় ।অক্সিজেন অণু অতি বেগুনী রশ্মি শোষণ করে অক্সিজেন পরমাণুতে বিয়োজিত হয় । এই পারমানবিক অক্সিজেন অক্সিজেন অণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওজোন অণু গঠন করে ।
ওজোন গ্যাসের উৎপাদন :
O₂ + UV রশ্মি ⟶ O + O ; O₂ + O ➝ O₃
ওজোন অণুর বিয়োজন :
O₃ + UV রশ্মি ⟶ O₂ + O ; O₃ +O ⟶ 2 O₂
উপরের দুই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি সাম্যাবস্থা বজায় থাকে ,ফলে ওজোন গ্যাসের পরিমান স্থির থাকে ।
পরিবেশ দূষণের কারণে বর্তমানে ওজন স্তরটি পাতলা হয়ে যাচ্ছে ।এই ওজোন গ্যাসের পরিমান কমে যাওয়া কে ওজোন ছিদ্র বা ওজোন গওহর বলে ।ওজোন স্তর ধংসের জন্য গ্যাসগুলি হল - ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) ,নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড ( প্রধানত নাইট্রিক অক্সাইড ,NO)
ওজোন স্তর ধ্বংসের ক্ষতিকারক প্রভাব :
মানুষের ওপর প্রভাব - চামড়ার ক্যান্সার হতে পারে ,চোখে ছানি পড়তে পারে ,প্রজনন ক্ষমতা কমতে পারে ।
মানুষের ওপর প্রভাব - চামড়ার ক্যান্সার হতে পারে ,চোখে ছানি পড়তে পারে ,প্রজনন ক্ষমতা কমতে পারে ।
উদ্ভিদের ওপর প্রভাব - সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে ,পাতা বিবর্ণ হয়ে যাবে ,বীজের অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়া বিগ্নিত হবে ।
বারিমণ্ডলের ওপর প্রভাব -ফাইটোপ্ল্যাংটন এর সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া কমে যাবে ,ফলে সামুদ্রিক প্রাণীরা যারা ফাইটোপ্ল্যাংটন খেয়ে জীবন ধারণ করে তাদের বিনাশ হবে \
জলবায়ুর ওপর প্রভাব - UV রশ্মি সরাসরি ভূপৃষ্টে পড়লে উষ্নতা বেড়ে যাবে ,জলবায়ুর পরিবর্তন হবে ।
গ্রিনহাউস এফেক্ট এবং বিশ্ব উস্নায়ন :
যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত CO₂,CH₄, N₂O এবং জলীয় বাস্প পৃথিবীপৃষ্ট থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গের অবলোহিত রশ্মির কিছু অংশ শোষণ করে এবং বাকি অংশ প্রতিফলিত করে ভূপৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ু মন্ডলকে ঊত্তপ্ত রাখে এবং জীবকুলের বাঁচার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে তাকে গ্রিনহাউস এফেক্ট বলে ।
গ্রীনহাউস গ্যাসগুলি হল - কার্বন -ডাই- অক্সাইড (CO₂) ,মিথেন (CH₄),ক্লোরোফ্লুরোকার্বোন (CFC), ওজোন (O₃),নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) এবং জলীয় বাস্প । গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে CO₂ এর অবদান সবচেয়ে বেশী (50%) |কারণ বায়ুমণ্ডলে এটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে ।
অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন এই দুটি গ্যাস কোনো গ্রিনহাউস প্রভাব দেখায় না ।
গ্রীন হাউস প্রভাবের উপযোগিতা :
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহাউস গ্যাসগুলি না থাকলে ভূপৃষ্ট দ্বারা বিকিরিত তাপ মহাশুন্যে চলে যেত । সেক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের উষ্নতা হতো প্রায় - 30⁰ C |এই অবস্থায় জীবকুল বেঁচে থাকতে পারতো না ।
বিশ্ব উস্নায়ান বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং :
পরিবেশ দূষণের ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে । গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রভাবে সারা বিশ্ব জুড়ে পৃথিবীর বায়ু মণ্ডলের উষ্নতা ক্রমশ বেড়ে চলার ঘটনাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বলে ।বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান কারণ গুলি হল - 1. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে CO₂ পরিমান বাড়ছে । 2. ক্রমাগত অরণ্য ছেদনের ফলে CO₂ বাড়ছে । 2. শিল্পায়নের ফলে অন্যান্য গ্রীনহাউস গ্যাস - CFC ,মিথেন ও নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড সমূহ বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাব :,1) পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে , এই শতাব্দীর মাঝামাঝি 2- 4 ⁰C উষ্নতা বৃদ্ধি পাবে , ফলস্বরূপ চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিবে ।
2) উষ্নতা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাবে এবং জলস্ফীতি দেখা যাবে , মহা প্লাবন হবে ।
3) উষ্নতা বৃদ্ধি সহ্য করতে না পেরে বহু পতঙ্গ ,পাখি অবলুপ্ত হবে ।
4) সুপার সাইক্লোন ,টর্নেডো আরো ভয়ঙ্কর হবে ।
5) বিশ্ব ব্যাপী ক্রান্তীয় রোগ -যথা ম্যালেরিয়া ,ডেঙ্গু ইত্যাদির প্রকোপ বাড়বে ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রতিকার :
1) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে ,বিকল্প শক্তি ,পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে । সাইকেল রিক্সা ইত্যাদির ব্যবহার বাড়াতে হবে ।
2) অরণ্য ছেদন কমাতে হবে । বনসৃজন করতে হবে ।
শক্তির যথাযথ ব্যবহার :
শক্তির প্রধান উৎস গুলি হল - কয়লা ,পেট্রল ডিজেল ,কেরোসিন ও রান্নার গ্যাস (LPG) প্রভৃতি জীবাশ্ম ।দীর্ঘ দিন যাবৎ এই শক্তিগুলি ব্যবহারের ফলে এই সম্পদ নিঃষেশসিত হওয়ার পথে ।ভবিষ্যতের কথা ভেবে শক্তির যথাযথ ব্যবহার করা প্রয়াজন ।
তাপন মূল্য :
1 kg ভরের কোনো কঠিন বা তরল জ্বালানির অথবা STP তে 1 m³ আয়তন বিশিষ্ট কোনো গ্যাসীয় জ্বালানির দহনে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয় তাকে ওই জ্বালানির তাপন মূল্য বলে ।
কয়েকটি জ্বালানির তাপনমূল্য :
জ্বালানি | তাপনমূল্য(kJ/kg) | জ্বালানি | তাপনমূল্য(kJ/kg) |
কয়লা (বিভিন্ন প্রকার ) | 15000 - 34000 | ডিজেল | 44800 |
কোক | 28000 - 31000 | গ্যাসোলিন | 47300 |
চারকোল | 29600 | প্রাকৃতিক গ্যাস | 52300 |
শুকনো কাঠ | 〜17000 | বেউটেন | 49510 |
পেট্রল | 48000 | হাইড্রোজেন | 150000 |
LPG | 50000 |
1) যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে জীবাশ্ম জ্বালানি ক্রমে ফুরিয়ে আসছে ।
2) জীবাশ্ম জ্বালানি পুনর্নবিকরণযোগ্য নয় । এই গুলি তৈরি হতে কোটি কোটি বছর সময় লাগে ।
3) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমালে উৎপন্ন CO₂ এর পরিমাণ কমবে ,ফলে বিশ্ব উস্ন্যায়নের মাত্রা কমবে ।
4) ভবিস্যত প্রজন্মের কথা ভেবে জীবাশ্ম জ্বালানি সঞ্চয় করা দরকার ।
স্থিতিশীল উন্নয়ন :
ভবিষৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে প্রাকৃতিক সম্পদগুলি সম্পূর্ণ নিঃশেষিত না করে যখন উন্নয়নের স্বার্থে সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে আহরণ ও ব্যবহার করা হয় তখন তাকে স্থিতিশীল উন্নয়ন বলে ।
স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার :
স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য দূষণহীন বিকল্প শক্তির ব্যবহার প্রয়োজন । কয়েকটি বিকল্প শক্তি হল - সৌর শক্তি ,বায়ু শক্তি ,জোয়ার-ভাটার শক্তি ,ভূতাপ শক্তি , বিয়োমাস শক্তি ।
অনবিকরণ যোগ্য শক্তি : যে সমস্ত শক্তির উৎস ক্ষয়িষ্ণু এবং যাদের ভান্ডার সীমিত তাদের অনবিকরণ যোগ্য শক্তি বলে । যেমন - কয়লা , পেট্রোলিয়াম ,প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি ।
পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তি : যে সমস্ত শক্তির উৎস কখনও শেষ হয় না ,যাদের থেকে বারবার শক্তি উৎপাদন করা যায় পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তির উৎস বলে । যেমন - সৌর শক্তি ,বায়ু শক্তি ইত্যাদি ।
সৌরশক্তি :
সৌরশক্তি অচিরাচরিত ও পুনর্নবিকরণ যোগ্য শক্তির উৎস । এই শক্তি দূষণ মুক্ত । এই শক্তিকে বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগানো যায় । যেমন - সোলার কুকার দ্বারা রান্না হয় , সোলার হিটারে জল গরম করা যায় , ফোটোভোল্টাইক কোষের দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় ।
ফোটোভোল্টাইক কোষ

সোলার কুকার
বায়ুশক্তি :
প্রবাহিত বায়ুর গতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে টারবাইনের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যায় । এটিও দূষণ মুক্ত শক্তির উৎস ।বায়ুকলের সাহায্যে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন হয় ।
বায়ুকলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন

জোয়ার- ভাটার শক্তি :
সমুদ্রের জোয়ার ভাটার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ।
ভূ তাপ শক্তি :
আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা উদগীরণ এর সময় প্রচন্ড গরম ম্যাগমা বেরিয়ে আসে । অর্থাৎ পৃথিবীর অভ্যন্তর অনেক গরম এবং অভ্যান্তরে প্রচুর পরিমানে তাপ শক্তি সঞ্চিত আছে । এই অভ্যন্তরীন তাপ শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় । এই শক্তিকে বলা হয় ভূতাপ শক্তি ।শিলাস্তরের ফাঁকে গরম ম্যাগমা আটকা পড়ে শিলা স্তরকে প্রচণ্ড গরম করে দেয় । ওই শিলাস্তরের সংলগ্নে থাকা জল গরম হয়ে বাস্প হয়ে যায় । এই জলীয় বাস্পকে ভূপৃষ্টে নিয়ে এসে টারবাইনের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় ।

বিয়োমাস শক্তি :
কৃষিজাত বর্জ্য ,পচা গাছপালা , আখের ছিবড়া ,শাকসবজি ,কচুরিপানা ,প্রাণীর মলমূত্র ইত্যাদি পদার্থগুলোকে একত্রে বিয়োমাস বলে । বায়োমাসের মধ্যে রাসায়নিক শক্তি আবদ্ধ থাকে , একে বায়োমাস শক্তি বলে ।এটি একটি পুনর্নবীকরণ শক্তি ।
বায়োগ্যাস :
বায়োমাসকে বায়ুর অনুপস্থিতিতে ব্যাক্টিরিয়ার সাহায্যে বেয়োজিত করলে যে গ্যাসীয় মিশ্রণ উৎপন্ন হয় তাকে জৈব গ্যাস বা বায়োগ্যাস বলে । বায়োগ্যাসের গ্যাসের প্রধান উপাদান মিথেন ( 50- 80 %) | বায়োগ্যাস জ্বালানির কাজে ও আলো জ্বালাতে ব্যবহৃত হয় । বায়োগ্যাসের দ্বারা বিদ্যুৎ ও উৎপাদন করা যায় ।
কয়লা খনির মিথেন :
কয়লা খনিতে কয়লার কঠিন স্তরে অধিশোষিত মিথেন গ্যাসই হল কোলবেড মিথেন ।কয়লার বিভিন্ন স্তরে মিথেন মুক্ত অবস্থায় বা জলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে ।এই মিথেন গ্যাস আহরণের জন্য দুটি সম কেন্দ্রিক পাইপ কয়লা স্তর পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয় ।একটি পাইপ দিয়ে পাম্প করে জল বের করা হয় । জল বেরিয়ে যাবার পর চাপ হ্রাস পায় ফলে অপর পাইপ দিয়ে মিথেন বেরিয়ে আসে ।
মিথেন হাইড্রেট :
সমুদ্রের তলদেশে পাললিক শিলাস্তরে মিথেন ও জলের অণু বরফের আকারে জমা থাকে । মিথেন হাইড্রেট এর সংযুক্তি হল 4 CH₄. 23 H₂O |
বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ): https://forms.gle/2J8WxyjQUcoPxM219
1.ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী পদার্থটি হল
A) N₂ B) CO₂ C) CFC D) O₂
2. কোনটি গ্রীনহাউস গ্যাস নয় ?
A) CH₄ B) N₂O C) N₂ D) CO₂
3. কোনটির তাপন মূল্য সবচেয়ে বেশি ?
A) কাঠ B) LPG C) কয়লা D) ডিজেল
4. নীচের কোন গ্যাসটি ভূপৃষ্ট থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট অবলোহিত রশ্মি শোষণ করে ?
A) N₂ B) O₂ C) CH₄ D) He
5. নীচের কোনটি গ্রীনহাউস গ্যাস নয় ?
A) মিথেন B) জলীয় বাস্প C) কার্বন-ডাই-অক্সাইড D) অক্সিজেন
6.একটি অচিরাচরিত শক্তির উৎস হল
A) পেট্রোল B) কেরোসিন C) বায়োগ্যাস D) কয়লা
7.প্রতি কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর উষ্নতা প্রায়
A) 10⁰ C কমে B) 6.5⁰ C বাড়ে C) 6.5⁰ C কমে D) 10⁰ C বাড়ে
8. বায়োগ্যাসের প্রধান উপাদান
A) মিথেন B) হাইড্রোজেন C) অক্সিজেন D) এসিটিলিন
9. কোনটি জীবাশ্ম জ্বালানি নয় ?
A) কয়লা B) ডিজেল C) সৌরশক্তি D) পেট্রোল
10.গ্রিনহাউস গ্যাস হিসাবে পৃথিবীর উষ্নতা বৃদ্ধির জন্য বেশি দায়ী
A) N₂O B) CH₄ C) CO₂ D) H₂O বাস্প
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন